মুস্তাফিজুর রহমান ক্রিকেট বিশ্বকে অবাক করে দিয়েছিলেন প্রথম
আবির্ভাবে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তিনি এসেছিলেন জ্বলন্ত নক্ষত্র হয়ে। নজরে
পড়েছিলেন হাল আমলের ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে। তাকে লুফে নিতে রীতিমতো
প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছিল। জাতীয় দলের পাশাপাশি আইপিএল, পিএসএল ও কাউন্টি
ক্রিকেটেও তার পা পড়েছে। কিন্তু আগের সেই মুস্তাফিজকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে
না। ইনজুরিও ভোগাচ্ছে তাকে।
আর এতেই ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে খেলোয়াড়দের পাঠানো নিয়ে টনক নড়েছে বাংলাদেশ
ক্রিকেট বোর্ডের। ২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অভিষেক হওয়ার পর গত তিন
বছর ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে দল পেয়েছেন মোস্তাফিজ। কিন্তু সেখানে খেলে কী
লাভ হয়েছে তার? প্রশ্নটা এখন সবার মুখে মুখে। দুই হাতে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা
এলেও তার ক্রিকেট ক্যারিয়ারই এখন হুমকির মুখে পড়ছে। অভিষেকের তিন বছরের
মধ্যে সেই মুস্তাফিজ কোথায় হারালেন! তার এই হারিয়ে যাওয়ার নেপথ্যে বেশি
বেশি ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট খেলাকে দায়ি করছেন অনেকে। সেই দাবি আবারও
জোরালো হলো এবারের আইপিএল থেকে ফিরে ইনজুরিতে পড়ে আফগানিস্তান সিরিজ থেকে
তিনি ছিটকে যাওয়ায়। মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে আইপিএলে পায়ের আঙুলে চোট
পেয়েছেন তিনি। সেই চোট আফগানিস্তান সিরিজ থেকে ছিটকে দিয়েছে এই বাঁহাতি
পেসারকে। ২০১৬ সালে ক্যারিয়ারের প্রথম আইপিএলে বাজিমাত করেছিলেন মুস্তাফিজ।
সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদকে প্রথম শিরোপা এনে দেওয়ার আসরে উদীয়মান সেরা
খেলোয়াড় হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু দেশে তাকে ফিরতে হয়েছিল হ্যামস্ট্রিং ও
কাঁধের চোট নিয়ে। সেই চোট অল্প থাকতেই ইংল্যান্ড যান সাসেক্সের হয়ে
টি-টোয়েন্টি ব্লাস্ট খেলতে। দ্বিতীয় ম্যাচেই চোটটা বড় হয়ে দাঁড়ায়। এরপর
যেতে হয় ছুরি কাঁচির নিচে। অস্ত্রোপচার শেষে প্রায় এক বছর মাঠের বাইরে
ছিলেন মুস্তাফিজ। এরপর মাঠে ফিরলেও সেই ঝলমলে মুস্তাফিজকে আর খুঁজে পাওয়া
যায়নি। গত দুই বছর চেষ্টা করেও নিজের সেরা ফর্মে ফিরতে পারেননি তিনি।
আইপিএলে আগের বছর মাত্র এক ম্যাচ খেলেই বাদ পড়েন। এবার নতুন ঠিকানায় গিয়েও
সব ম্যাচ খেলতে পারেননি। তাছাড়া পাকিস্তান সুপার লীগে লাহোর কালান্দার্সের
হয়ে খেলছেন বেশ কিছু ম্যাচ। সব মিলিয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি লীগ খেলায় ব্যস্ত
তিনি। আইপিএলের তিন আসরের মধ্যে দুবারই ফিরেছেন চোট সঙ্গী করে। মুস্তাফিজের
নতুন এই ইনজুরিতে টনক নড়েছে বিসিবিরি। ফ্র্যাঞ্চাইজি লীগে ক্রিকেটারদের
অংশ নেওয়া নিয়ে নতুন করে ভাববে বলে জানালেন ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের
চেয়ারম্যান আকরাম খান, ‘এবার আমরা অনেক গুরুত্ব দিয়ে (ফ্র্যাঞ্চাইজি
ক্রিকেটে খেলা) চিন্তা করব। এর আগে মুস্তাফিজুর রহমান ইনজুরি (আইপিএল থেকে)
নিয়ে ফিরেছে, বাংলাদেশ ক্রিকেট ভুগেছিল।
এবারও একই সমস্যা। এটা বোর্ড সভায় তোলা হবে। এটা নিয়ে এবার ভাবতে হবে, কোন খেলোয়াড়কে খেলতে দেওয়া উচিত আর কাকে নয়, সেটা নিয়ে চিন্তা করার সময় এসেছে।’
এবারও একই সমস্যা। এটা বোর্ড সভায় তোলা হবে। এটা নিয়ে এবার ভাবতে হবে, কোন খেলোয়াড়কে খেলতে দেওয়া উচিত আর কাকে নয়, সেটা নিয়ে চিন্তা করার সময় এসেছে।’

No comments:
Post a Comment