নারী কর্মসংস্থানে এশিয়ার অর্থনীতিতে যোগ হবে সাড়ে ৪ ট্রিলিয়ন ডলার - ARNews71.blogspot.com

https://arnews71.blogspot.com/

Thursday, May 31, 2018

নারী কর্মসংস্থানে এশিয়ার অর্থনীতিতে যোগ হবে সাড়ে ৪ ট্রিলিয়ন ডলার

কর্মক্ষেত্রে আরো বেশি নারী কর্মী নিয়োগ দেয়া হলে এশিয়ার অর্থনীতিতে বিস্ময়কর গতি আসবে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ব্যবস্থাপনা পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ম্যাককিনসে গ্লোবাল ইনস্টিটিউটের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এশিয়ায় লিঙ্গবৈষম্য হ্রাস কার্যক্রমে অগ্রগতি হলে ২০২৫ সালের মধ্যে অঞ্চলটিতে সমন্বিত জিডিপি ৪ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ডলার বাড়বে। খবর সিএনএন মানি।
প্রকাশিত এ প্রতিবেদনটিতে ম্যাককিনসে জানায়, এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চল ‘নিঃসন্দেহে বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে প্রগতিশীল অঞ্চল’। কিন্তু এ অঞ্চলটিরই অনেক দেশে কর্মক্ষেত্রে এবং সামাজিক পরিসরে পুরুষের তুলনায় নারীকে অনেক বেশি বৈষম্যমূলক পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়। এ অঞ্চলের সবচেয়ে বেশি লিঙ্গবৈষম্য রয়েছে, এমন দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ও ভারতের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এসব দেশের কর্মক্ষেত্রে নারীর সংখ্যা কম থাকায় অর্থনৈতিক ক্ষতি নিয়ে আগেই উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।
জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো উন্নত অর্থনীতির দেশগুলোতেও নিয়োগের ক্ষেত্রে ‘অতিমাত্রায়’ লিঙ্গবৈষম্য রয়েছে বলে প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়। এশিয়া অঞ্চলের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীন কর্মক্ষেত্রে আরো বেশি নারীকর্মী নিয়োগের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। কিন্তু নেতৃত্বের পর্যায়ে দেশটিতে এখনো পর্যাপ্ত হারে নারী কর্মীর সংখ্যা চোখে পড়ে না। কর্মক্ষেত্রে লিঙ্গভারসাম্য রক্ষার জন্য প্রতিবেদনটিতে ফিলিপাইন, নিউজিল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরের প্রশংসা করা হয়েছে। এর পরও দেশগুলোকে আরো অনেক কাজ করতে হবে বলে জানিয়েছে ম্যাককিনসে।
গবেষণা প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, কর্মক্ষেত্রে নারীর সংখ্যা বাড়ানোর মাধ্যমেই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে বড় ধরনের সহায়তা আসতে পারে। নারীদের আরো বেশি উৎপাদনশীল ভূমিকায় কাজ করার সুযোগ দেয়ার মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়বে।
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীন লিঙ্গবৈষম্য হ্রাসে পরিবর্তন আনার সুবাদে প্রবৃদ্ধি অর্জনের দিক থেকে সবচেয়ে এগিয়ে থাকবে। ম্যাককিনসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চীনে লিঙ্গবৈষম্য হ্রাস হলে জিডিপিতে ২ দশমিক ৬ ট্রিলিয়ন ডলার যোগ হবে। লিঙ্গবৈষম্য হ্রাসের মাধ্যমে পরবর্তী সম্ভাব্য সুফলভোগীর স্থানে রয়েছে ভারত। লিঙ্গবৈষম্য হ্রাস হলে দেশটির অর্থনৈতিক কার্যক্রমে ৭৭ হাজার কোটি ডলার যোগ হতে পারে। এ অবস্থায় অঞ্চলটির নীতিনির্ধারকদের কর্মক্ষেত্রে নারী অংশগ্রহণের হার বাড়াতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে ম্যাককিনসের প্রতিবেদনটিতে।
কোন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায়, সে বিষয়ে ম্যাককিনসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সমাজে নারীর ভূমিকা নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন এবং শিশুপরিচর্যা ব্যবস্থা উন্নত করার মতো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
প্রতিবেদনটিতে আরো বলা হয়েছে, অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে নারীর পূর্ণ সম্ভাবনা বিকাশের সুযোগ না দিয়ে প্রবৃদ্ধির চেষ্টায় এক হাত পেছনে বেঁধে রেখে লড়াই করার শামিল।
এদিকে চলতি মাসের শুরুর দিকে বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বে ১৬৭টি দেশে কমপক্ষে এমন একটি আইন রয়েছে, যা নারীদের অর্থনৈতিক সুযোগ গ্রহণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। দ্য উইমেন, বিজনেস অ্যান্ড দ্য ’ল শীর্ষক প্রতিবেদনটিতে কীভাবে বিভিন্ন দেশের আইনের কারণে কাজ, সম্পদ, বিচার ও ঋণে নারীদের প্রবেশাধিকার ক্ষুণœ হচ্ছে, তা উল্লেখ করা হয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, সর্বশেষ জরিপের সঙ্গে তুলনা করে দেখা গেছে, বৈষম্যমূলক আইন কিছু কিছু ক্ষেত্রে অল্প কমেছে অথবা বেড়ে গেছে। বর্তমানে ৮৮ শতাংশ দেশেই কমপক্ষে একটি করে নিয়ন্ত্রণমূলক আইন রয়েছে; যেখানে ২০১৬ সালে এ হার ছিল ৮৯ শতাংশ। সাম্প্রতিক জরিপ প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, গত দুই বছরে নারীদের অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিতে ৬৫টি দেশে ৮৭টি আইনি সংস্কার সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া ২০১৬ সাল থেকে চলতি বছর পর্যন্ত ২৮টি দেশ নারীদের কাজ পাওয়া সহজ করেছে এবং ২৪টি দেশ নারীদের ঋণগ্রহণের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তুলে নিয়েছে।
]সূত্র : পত্রপত্রিকা]

No comments:

Post a Comment